ব্লগারে যুক্ত হওয়া নতুন এসইও সেবার সাথে পরিচিত হয়েছেন তো?

আপনারা অনেকেই হয়তো খেয়াল করেছেন ব্লগারে সেটিং ট্যাবে Search preferences নামে নতুন একটি পরিসেবা যুক্ত হয়েছে।এটা অনেক বড় পাওয়া এবং খুবেই দরকারী একটা ফিচার যেটা ব্লগস্পট ব্লগ ব্যবহারকারীদের অনেকদিন থেকে চাওয়া ছিল।অনেকেই ব্লগারে তৈরি করা ব্লগ থেকে সরে গিয়ে ওয়ার্ডপ্রেসে চলে যান ব্লগারের দুর্বল সার্চইঞ্জিন অপটামাইজেশানের সুযোগের কারণে।ব্লগারে আগে মেটা ট্যাগ,ডেসক্রিপশান,৪০৪ এরর পেইজ দেখানো,ডিলিট হওয়া লিংকের জন্য রিডাইরেক্ট,নো-ফলো সেবা,হেডার ট্যাগ কিংবা কাষ্টম রোবট ফাইল বানানোর সুবিধা ছিল না ওয়ার্ডপ্রেসের মতো।
কিন্তু খুশির কথা হল এইসব সুবিধা ব্লগারে যুক্ত হয়েছে,তাই খুব সহজেই আপনি আপনার ব্লগকে সার্চ-ইঞ্জিনের সাথে আপন করে তুলতে পারবেন।বিগতদিন গুলোতে ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যাপক আগ্রগতি লক্ষ্য করে গুগল তার এই ব্লগিং সার্ভিসকে ওয়ার্ডপ্রেসের সমতুল্য করার আপ্রান চেষ্টা ফসল এই ফিচার।চলুন দেখে নেই কি সুবিধা আছে এই ফিচারে এবং কিভাবে সেগুলো ব্যবহার করতে হয়।আমাকে কিছু ব্যাপারে বুঝতে সুবিধা করেছে মুস্তাফা আহমেদজাই এর ব্লগ।
নতুন এই ফিচারে কি কি সুবিধা আছে?:
হোমপেইজ এবং সাবপেইজ এর জন্য মেটা ট্যাগ ব্যবহার
৪০৪ এরর পেইজ
ডিলিট হওয়া লিংকগুলোর জন্য কাষ্টম রিডাইরেক্ট লিংক যোগ করার সুবিধা
কাষ্টম রোবট ফাইল (এডভান্স ইউজারদের জন্য,নতুনরা না জানলে ডিফল্ট হিসেবে রেখে দিবেন)
কাষ্টম রোবট হেডার ট্যাগ ব্যবহার (এডভান্স ইউজারদের জন্য,নতুনরা না জানলে ডিফল্ট হিসেবে রেখে দিবেন)
পোস্টিং এডিটরে লিংককে নো-ফলো হিসেবে যোগ করার সুবিধা
৪র্থ ও ৫ম সেটিংসগুলো এডভান্স লেভেলের ইউজারদের জন্য যাদের এসইও এবং সার্চইঞ্জিন ইন্ডেক্সিং কিংবা ক্রাউলার সম্পর্কে ভাল ধারনা আছে।নতুনরা এই দুটি অপশান ডিফল্ট রেখে দেয়ার চেষ্টা করবেন।কারণ আপনি যদি না জেনে এগুলো সেটাপ করার চেষ্টা করেন তাহলে ভুলের কারণে হয়তো সার্চইঞ্জিন আপনার সাইট ইনডেক্স করতে নাও পারে।তাই না বুঝে এইগুলো নিয়ে নাড়াছাড়া করার দরকার নেই।চলুন ধাপে ধাপে দেখে নিই এই ফিচার ব্যবহার করার পদ্ধতি।
মেটা ট্যাগস ব্যবহার:
এখানে মেটা ট্যাগ বলতে মেটা ডেস্ক্রিপশান বলা হয়েছে।মেটা ডেসক্রিপশান হচ্ছে সাইট সম্পর্কে কিছু লেখা যেটি সার্চ রেজাল্টে দেখে ভিজিটর বুঝতে পারে সাইটে কি আছে।সার্চ করা কিওয়ার্ড এর সাথে যদি ডেস্ক্রিপশান মিলে যায় তাহলে সেটি ব্লগের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।তাই ডেসক্রিপশান দেয়ার সময় কিওয়ার্ড এর সাথে মিলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করুন।ডেসক্রিপশান কি জিনিষ বুঝতে সমস্যা হলে নীচের ছবিতে দেয়া হলুদ রঙের লেখাগুলোর দিকে লক্ষ্য করুন।এই লেখাগুলো টেকস্পেট এর ডেসক্রিপশান।
ব্লগারে এই ডেসক্রিপশান সেট করার জন্য ড্যাসবোর্ড থেকে Settings থেকে Search preferences এ ক্লিক করুন।বুঝতে সমস্যা হলে নীচের চিত্রটি লক্ষ্য করুন।এখানে উপরের দিকে গেলে প্রথম যে অপশানটি পাবেন সেটি হল Meta Tags (Description)।এটির পাশে Edit লেখাতে ক্লিক করলে মেটা ডেসক্রিপশান লেখার জন্য একটি বক্স আসবে।সেই বক্সে আপনার সাইট সম্পর্কে ১৫০ শব্দের মধ্যে কিছু লিখে বক্সের উপরে Enable search description? এর Yes বাটনে ক্লিক করে ডেসক্রিপশান হিসেবে সেভ করুন।বুঝতে সমস্যা হলে নীচের চিত্রের দিকে লক্ষ্য করুন।
আপনি ব্লগারের নিজস্ব টেমপ্লেট বা টেমপ্লেট ডিজাইনার দিয়ে বানানো টেমপ্লেট ব্যবহার না করেন তাহলে এই ডেসক্রিপশান আপনার ব্লগে কাজ করবে না।এইজন্য আপনাকে কিছু কোড ট্যাগ এর পরে সংযুক্ত করতে হবে।প্রথমে Template >Edit HTML এ গিয়ে নীচের কোডগুলো কপি করে ট্যাগ এর পরে পেষ্ট করে সেভ বাটনে ক্লিক করুন।
1
2
3
|
|
এছাড়া নির্দিষ্ট পোস্টে ডেসক্রিপশান যোগ করার জন্য পোস্টিং এডিটরের পাশে নতুনSearch Description নামে একটি ফিচার দেখতে পাবেন যেখানে আপনি ওই পোস্ট সম্পর্কে কিছু লিখে দিতে পারেন যা সার্চ রেজাল্টে ওই পোস্ট আসলে তার নীচে দেখাবে।
৪০৪ এরর এবং কাস্টম রিডাইরেক্ট:
৪০৪ এরর হচ্ছে কোন সাইটের কোন পেইজ পাওয়া না গেলে যেই বার্তা দেখায় সেটি।যেমন আগে ব্লগের কোন লিংক পাওয়া না গেলে নীচের চিত্রের মত দেখাত।
আপনি চাইলে এই পেইজকে আরো সুন্দরভাবে ভিজিটরদের কাছে প্রদর্শন করতে পারেন।যেমন, আপনি হয়তো এই পেইজে এইভাবে লিখতে পারেন যে,
লক্ষ্য করুন!!! আপনি যেই লিংক খোঁজ করছেন সেটি নতুন লিংক এ পরিবর্তন হয়ে গেছে অথবা নতুনকরে আপডেট হয়ে গেছে।নতুন লিংক পেতে হোমপেইজ চেক করুন।
এটি আপনি আপনার ইচ্ছামত বসাতে পারেন।ব্লগারে এই সুবিধা পাওয়ার জন্য নতুন একটি অপশান দেখতে পাবেন Settings থেকে Search preferences এ গেলে যেটি Custom Page Not Found নামে আছে।এর পাশে এডিট লেখাতে ক্লিক করলে একটি বক্স পাবেন যেটি আগের মতই।একইভাবে আপনার ইচ্ছামত লিখে সেভ করুন।এইখানে এইচটিএমেল কোডও চাইলে ব্যবহার করতে পারবেন।
এরপাশেই আরেকটি অপশান পাবেন যেটি Custom Redirects নামে পরিচিত।এটি হচ্ছে আপনার ডিলিট হওয়া লিংকসমূহকে অন্যকোন লিংকে রিডাইরেক্ট করার পদ্ধতি।যেমন, techspate.com/techspate এই লিংকটি ডিলিট কোন কারণে অথবা কোন কারনে অন্য লিংক এ পরিবর্তন করে দিয়েছি,কিন্তু এই লিংকটি অনেক সাইটে ব্যাকলিংক হিসেবে আছে।নতুন কোন ভিজিটর এই লিংক ধরে আসলে যদি না পায় তাহলে ব্লগের জন্য খুবেই মঙ্গলকর হবে না।কিন্তু আমি চাইলেই techspate.com/techspate ভিজিট করা সবাইকে techspate.com এ রিডাইরেক্ট করতে পারেন রিডাইরেক্ট সুবিধা ব্যবহার করে।ফলে ভিজিটর হারাবার সম্ভাবনা নাই।ব্লগারে এখন খুব সহজেই এই রিডাইরেক্ট করতে পারেন।Custom Redirects এর পাশে এডিট এ ক্লিক করে যেই লিংকটি ব্রোকেন হয়ে গেছে সেটি From এর পাশের বক্সে লিখে যেই ঠিকানায় পাঠাতে চান সেটি To এর পাশের বক্সে লিখে সেভ করুন।এভাবে আপনি যতখুশি লিংক রিডাইরেক্ট করতে পারবেন।
কাস্টম রোবট এবং হেডার ট্যাগ ব্যবহার:
আগেই বলেছি এই অপশানদুটো এডভান্স লেভেলের ব্লগার ব্যবহারকারীদের জন্য।নতুনরা এটি ধরার দরকার নেই তারপরেও হেডার ট্যাগের অপশানটি নীচের চিত্রের মত করে দিতে পারেন।এটা করার জন্য Crawlers and indexing এর অন্তর্গত Custom robots header tags এর পাশে এডিট এ ক্লিক করে অপশানগুলো ঠিকমত সিলেক্ট করে এনাবম করে দিবেন।
rel nofollow লিংক সুবিধা:
আপনার লেখায় দেয়া কোন লিংক যাতে সার্চইঞ্জিন ফলো করতে না পারে সেটি নির্দিষ্ট করে দেয়াই হচ্ছে কোন লিংককে nofollow সুবিধা।এই nofollow এর সুবিধা অনেক।একটি পস্টে অনেক লিংক Do-follow অবস্থায় থাকলে সেটি ব্লগের জন্য মঙ্গলজনক হয় না তাই অদরকারী লিংকসমূহ সবসময় nofollow করে রাখা এসইও এর জন্য ভাল।nofollow নিয়ে পরে একদিন ইনশাআল্লাহ্ বিস্তারিত স্পেট লিখব।আপাতত এটাই জানুন গুরুতবপুর্ন লিংক যেমন, ফেসবুক প্রোফাইল,মেইল এড্রেস,ব্রাউজার এড-অন পেইজ,সার্চইঞ্জিন পেইজ এইগুলো বাদে অন্য সকল লিংকসমূহ nofollow করাই ভাল।ব্লগারে কোন পোস্টে লিংক দেয়ার সময় এটি খুব সহজেই দেয়ার নতুন ব্যবস্থা করা হয়েছে।লিংক যুক্ত করার সময় বক্সের নিচে Add’ rel=nofollow’ attribute এ ক্লিক করে টিক মার্ক দিলেই হবে।
তাহলে আজেই আপনার ব্লগের নতুন সেটিং ঠিক করুন আর ব্লগে ভিজিটর আসার পথ সুগম করে দিন।হ্যাপী ব্লগিং!!